রূপকল্প
পাঠককে সত্য ও বিস্তারিত তথ্য পরিবেশন করা, বিশ্বকে জানতে ও সম্ভাবনার পথ খুঁজে নিতে সাহায্য করা এবং সমাজে ইতিবাচক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবর্তনের পক্ষে কাজ করা।
ব্রত
আমরা সাংবাদিকতায় পেশাদারত্ব ও ব্যবসায় নৈতিকতার সংস্কৃতিকে লালন করি। আমরা সম্ভাব্য পরিবর্তনকে বিবেচনায় নিয়ে সৃজনশীলতা ও সক্ষমতা বাড়িয়ে সবচেয়ে সময়োপযোগী সংবাদমাধ্যম হিসেবে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখি।
মূল্যবোধ
পেশাদারত্বআমরা নিরপেক্ষ ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ধারা অব্যাহত রাখি।
স্বাধীনতাআমরা সত্যের সন্ধান করি, আর্থিক স্বাবলম্বিতা তার শক্তি জোগায়।
জনমুখিতাআমরা মানুষের কথা বলি, মানুষের পাশে থাকি।
ইতিবাচকতাআমরা ইতিবাচক পরিবর্তনকে উৎসাহ দিই, সমর্থন করি, এর সপক্ষে কথা বলি।
সংহতিআমরা প্রতিশ্রুতি রক্ষা ও কর্তব্য পালনে আন্তরিক।
সৃজনশীলতাআমাদের দৃষ্টি ভবিষ্যতের দিকে প্রসারিত।
সাংবাদিকতা নীতিমালা
সম্পাদকীয় অবস্থান- পূর্ণ সত্য উদ্ঘাটনে ও পরিবেশনে আমরা সংকল্পবদ্ধ।
- তথ্য পরিবেশনে আমরা বস্তুনিষ্ঠ, আপসহীন ও পক্ষপাতশূন্য।
- গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতা, আপামর মানুষের মঙ্গল ও উন্নয়ন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমরা অবিচল।
- এ দেশের নাগরিকদের সৃষ্টিশীল উদ্যম এবং বর্তমান ও ভবিষৎ-মুখী উন্নয়নে আমরা আস্থা রাখি।
- নারী, শিশু এবং ধর্মীয় সম্প্রদায় বা ক্ষুদ্র জাতিসত্তার আত্মমর্যাদা ও অধিকারের প্রতি আমরা সজাগ ও সংবেদনশীল।
- শ্রেণি, বয়স, লিঙ্গ, সম্প্রদায় ও মতবিশ্বাস-নির্বিশেষে সবার তথ্য ও মতামতের চাহিদার প্রতি আমরা সজাগ।
মৌলিক কর্তব্য- তথ্য সংগ্রহ ও পরিবেশনের ক্ষেত্রে আমরা স্বাধীন ও বস্তুনিষ্ঠ।
- আমরা কোনো বিষয়ে সংবাদ বা সে-সংক্রান্ত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ-মতামত পরিবেশন করি, কখনো সংবাদ তৈরি করার বা সংবাদ হয়ে ওঠার মতো ঘটনা ঘটাই না। তবে কখনো কখনো আমরা গুরুত্বপূর্ণ জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করি।
- স্বার্থপ্রণোদিত বা ভীত হয়ে কিংবা নিজের অবস্থানগত কারণে আমরা কোনো ভুল কিংবা আংশিক সত্য তথ্য দিই না বা তথ্য বিকৃত করি না। স্বেচ্ছায় এমন কোনো তথ্য গোপন করি না, যাতে প্রকাশিত তথ্য ভুল ধারণা দিতে পারে।
- আমরা সংবাদে নিজের মত বা মন্তব্য পরিবেশন করি না। তথ্যের সঙ্গে নিজের মনগড়া ধারণা বা কল্পনা যুক্ত করি না। সংবাদ ও মতামত আমরা সুস্পষ্টভাবে আলাদা করি এবং সেভাবে পরিবেশন করি।
- কোনো কারণে ভুল তথ্য পরিবেশিত হয়ে থাকলে সংবাদ সূত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করি কিংবা অবিলম্বে সংশোধনী দিয়ে সে বিষয়ে সঠিক তথ্য প্রদানের ব্যবস্থা নিই।
- সংবাদ, ছবি বা ভিডিও পরিবেশন করতে গিয়ে আমরা রুচির সীমা অতিক্রম করি না, যদি না তা করতে গিয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ কোনো সংবাদের মূল মর্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তথ্য, সংবাদ, মতামত- যে বিষয়ে জনসমাজে একাধিক ভিন্নমত রয়েছে, সে-সংক্রান্ত সংবাদ পরিবেশন করার সময় আমরা গুরুত্বপূর্ণ বিবিধ দৃষ্টিকোণের সমাহার ঘটাই।
- উদ্ধৃতিচিহ্নের ভেতরে সবার মৌখিক বক্তব্য আমরা হুবহু পরিবেশন করি। কেবল স্থানবিশেষের আঞ্চলিক বাংলা বা বিদেশি ভাষা উদ্ধৃতি হিসেবে ব্যবহারের সময় মান বাংলায় রূপান্তর করা হয়। সরাসরি উদ্ধৃতি না দিয়ে বক্তব্যের সারকথা বা চুম্বক অংশ পরোক্ষ উক্তি হিসেবে পরিবেশনের সময় আমরা বক্তার মূল বক্তব্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করি না।
- আমরা কোনো বই, জার্নাল, পত্রপত্রিকা, ওয়েবসাইট বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে তথ্য, ছবি বা ভিডিও পরিবেশন করলে তার সূত্র যথাযথভাবে উল্লেখ করি।
- সম্পাদকীয় স্তম্ভে আমরা বিভিন্ন বিষয়ে নিজেদের মতামত প্রকাশ করি।
- আমরা অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্রে গভীরভাবে বিশ্বাস করি। তাই আলোচিত সংবাদের উপসম্পাদকীয় স্তম্ভে আমাদের সঙ্গে সম-অবস্থানধর্মী না হলেও আমরা নানা বিষয়ে বিভিন্ন মত প্রকাশ করি। উপসম্পাদকীয় স্তম্ভে আমরা বিচিত্র মতের সমাহার ঘটাই এবং পর্যালোচনামূলক বিতর্ককে উৎসাহিত করি।
ছবি বা ভিডিও চিত্র পরিবেশন- মুদ্রণসৌকর্যের জন্য ছবির আলোছায়া বা রং সম্পাদনার সময় লক্ষ রাখি, যাতে তার মূল বিষয়বস্তু বা ভাব ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
- গৃহীত আলোকচিত্র বা ছবি সম্পূর্ণত বা তার নির্বাচিত, অর্থাৎ ক্রপ করা অংশ আমরা পরিবেশন করে থাকি, কিন্তু মুদ্রিত ছবির ভেতরে কোনো উপাদান আমরা বর্জন বা পরিবর্তন করি না।
- একাধিক ছবি কেটে, জুড়ে, সম্পাদনা করে কিংবা অন্য কোনো উপাদান যুক্ত করে পরিবেশন করার সময় আমরা ক্যাপশনে তাকে আলোকচিত্রণ, ফটো-ইলাস্ট্রেশন বা ‘ফটো-কোলাজ’ বলে উল্লেখ করি, যাতে পাঠক সেটিকে আলোকচিত্র বলে ভুল না করেন।
- পাঠকের মন পীড়িত হতে পারে—এমন ছবি বা ভিডিও আমরা প্রকাশ করি না। এ কারণে আমরা বীভৎস, নৃশংস বা রক্তাক্ত ছবি পরিহার করি। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশের জন্য এ ধরনের ছবি বা ভিডিও প্রকাশ জরুরি হলে সে-জাতীয় অংশ অস্পষ্ট করে দিই।
- ছবি বা ভিডিও প্রকাশের সময় আমরা লক্ষ রাখি, যাতে কেউ অকারণে বিপদাপন্ন বা হেয়প্রতিপন্ন না হন।
- আমরা ধর্ষণের শিকার কোনো নারীর ছবি বা ভিডিও প্রকাশ করি না। মৃত ব্যক্তির মর্যাদা যাতে ক্ষুণ্ন না হয়, সে বিবেচনায় আমরা মৃতদেহেরও ছবি বা ভিডিও প্রকাশ করি না। বিশেষ পরিস্থিতিতে জনস্বার্থে বা কোনো বিষয়ের গভীরতা তুলে ধরার জন্য এ নিয়মের ব্যতিক্রম করতে হলে সম্পাদকীয় বৈঠকে পর্যালোচনার পরে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিই। একই সঙ্গে সে ছবি বা ভিডিওর সঙ্গে সেটি প্রকাশের কারণ উল্লেখ করি।
অপরের অধিকার- সবার আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকারকে আমরা সম্মান জানাই। কারও সম্পর্কে সংবাদ পরিবেশন করার সময় সে সম্পর্কে আমরা তার ভাষ্য আবশ্যিকভাবে যুক্ত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করি। এ চেষ্টায় ব্যর্থ হলে তা উল্লেখ করি।
- কারও সম্পর্কে নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করার সময় আমরা সেই ব্যক্তির মানবিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন করি না।
- কোনো কারণে ভুল তথ্য পরিবেশিত হয়ে থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া আমরা অবিলম্বে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করি।
- সজ্ঞান পূর্বানুমতি ছাড়া আমরা কারও এমন বক্তব্য পরিবেশন করি না, যা তাঁর ঝুঁকি বা অযাচিত ক্ষতির কারণ উঠতে পারে।
- ব্যক্তিগতভাবে দেওয়া বক্তব্যের কোনো উদ্ধৃতি বক্তার পূর্বানুমতি ছাড়া আমরা ব্যবহার করি না।
- তথ্য সংগ্রহের সময় অসহায় বা তথ্যমাধ্যম সম্পর্কে ধারণা নেই—এমন ব্যক্তির দুর্বলতার সুযোগ আমরা নিই না। আদালতে দণ্ডিত ব্যক্তির আত্মীয়স্বজন সম্পর্কে প্রতিবেদনে অহেতুক উল্লেখ এড়িয়ে চলি।
- নির্যাতিত, নিগৃহীত বা সংখ্যালঘু কোনো ধর্ম, জাতি, সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে—এমন তথ্য পরিবেশনের সময় সে সম্পর্কে ওই গোষ্ঠীর দায়িত্বশীল ব্যক্তি এবং/অথবা পরিবেশিত তথ্য বিষয়ে বিশেষজ্ঞের মত তাতে সন্নিবেশিত করি।
সহিষ্ণুতা ও গ্রহিষ্ণুতা- কোনো ধর্ম, জাতিগত সম্প্রদায়, গোষ্ঠী বা লিঙ্গের দেশপ্রেম, মানবিক ক্ষমতা, জীবনাচার, উৎসব, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি সম্পর্কে আমরা কোনো কটূক্তি বা নেতিবাচক ইঙ্গিত করি না।
- আমরা উত্তেজনাকর ও স্পর্শকাতর পরিস্থিতিতে সর্বাধিক ধৈর্য ধারণ করি। তথ্যের প্রতিটি খুঁটিনাটি ভালোভাবে যাচাই করে নিই।
- কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশনের সময় আমরা অহেতুক তাঁর ব্যক্তিগত জীবন—যেমন তাঁর পারিবারিক সম্পর্ক, জাতি-ধর্ম-বর্ণ, লিঙ্গ, শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধিতা, জীবনাচার ইত্যাদি প্রসঙ্গ—টেনে আনি না।
প্রাতিষ্ঠানিক দায়- রাষ্ট্র ও সমাজ নিয়ে নাগরিকদের চাওয়া-পাওয়া ও আকাঙ্ক্ষার প্রতি আমরা সজাগ। সাংবাদিকতার পরিধির মধ্যে থেকে সে আকাঙ্ক্ষার প্রতি আমরা দায়বদ্ধ। আমাদের সে দায়বদ্ধতা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের অবস্থানের মুখাপেক্ষী নয়।
- জনস্বার্থের সঙ্গে যুক্ত সব গোপন তথ্য পাঠকদের গোচরে আনা আমরা কর্তব্য বলে মনে করি। তবে আমরা সচেতন থাকি, যাতে কোনো তথ্য পরিবেশনের কারণে জনসমাজ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
- প্রতিটি সংবাদের উৎসে প্রায় সব সময় আমরা নিজেরা যাই। যেখানে তা সম্ভব নয়, সেখানে অন্যের সরবরাহ করা তথ্য পরিবেশনের সময় আমরা সরবরাহকারীর কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করি এবং তাঁর বরাতে সংবাদ পরিবেশন করি।
- পত্রিকার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যাবতীয় খরচ আমরা নিজেরা বহন করি। তবে বিশেষ কারণে এর ব্যতিক্রম হলে—অর্থাৎ প্রয়োজনে অন্য কারও সহায়তায় যৌথভাবে অনুষ্ঠান আয়োজিত হলে—আমরা সতর্কভাবে সম্পাদকীয় বিবেচনার মাধ্যমে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিই এবং তা করতে গিয়ে সাংবাদিকতার নীতিমালা থেকে বিচ্যুত হই না।
সুযোগ-সুবিধা- সংবাদের উৎসের কাছ থেকে আমরা ব্যক্তিগত উপহার নিই না। সাধারণভাবে বিতরিত সৌজন্য উপহারের বেলায় ক্ষেত্রবিশেষে এর ব্যতিক্রম হতে পারে।
- যেসব দেশি বা বিদেশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের এ দেশে সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক স্বার্থ রয়েছে, তাদের খরচে আমরা ভ্রমণ করি না। বিশেষ পরিস্থিতিতে তা করতে হলেও সাংবাদিকতার অবস্থান থেকে বিচ্যুত হই না।
- কারও আমন্ত্রণে বিদেশ ভ্রমণে যেতে হলে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তার পূর্বানুমতি নিয়ে থাকি।
- তথ্য সংগ্রহের জন্য কোথাও গেলে সরকার ও রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে কোনো খরচ নিই না। নিজেদের খরচ আমরা নিজেরাই বহন করি।
- সাংবাদিক হিসেবে আমরা কোথাও কোনো অগ্রাধিকার নিই না।
- সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত অনুষ্ঠান, সভা বা প্রশিক্ষণ বাদে অন্যত্র আমরা বিনা মূল্যে প্রবেশাধিকার নিই না।
- বিজ্ঞাপনসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক বিবেচনায় আমরা আমাদের সাংবাদিকের কর্তব্যকে ক্ষুণ্ন করি না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমরা এমন কিছু লিখি না বা করি না, আমাদের সম্পাদকীয় অবস্থানের সঙ্গে যা দ্বন্দ্বপূর্ণ হয়, সাংবাদিকতার পেশার পক্ষপাতহীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে কিংবা প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ন করে।
- আমাদের পত্রিকা বা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ তথ্য আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করি না।
- পত্রিকা বা প্রতিষ্ঠানের কোনো বিষয়ে আমাদের নিজস্ব মত বা বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে না বলে প্রাতিষ্ঠানিক পরিমণ্ডলেই নিষ্পন্ন করি।
- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমরা এমন কিছু করি না, যা কোনো সম্প্রদায়, গোষ্ঠী, ধর্মানুসারী বা লিঙ্গের মানুষকে আহত করে কিংবা সমাজে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।
সমান্তরাল উপার্জন- আলোচিত সংবাদ ছাড়া আমরা অন্য কোথাও নিয়মিত মাসোহারার বিনিময়ে চাকরি করি না।
- বিচ্ছিন্ন, খণ্ডকালীন ও অনিয়মিত উপার্জনের ক্ষেত্রেও আমরা কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নিয়ে থাকি।
- তবে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে বিচ্ছিন্ন, খণ্ডকালীন ও অনিয়মিত উপার্জনের জন্য কখনো সাংবাদিকতাধর্মী কাজ করি না।
- বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কোনো সাংবাদিকী রচনা বা মত অন্যত্র প্রকাশ বা প্রচার করতে হলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে থাকি। তবে এ ক্ষেত্রেও তা এমন প্রতিষ্ঠানে প্রদান করি না, যার সঙ্গে আলোচিত সংবাদের স্বার্থের বিরোধ রয়েছে।
- স্বাধীন ও সৃষ্টিশীল কাজের ক্ষেত্রে কোনো বাধা না থাকলেও আমরা পেশাগত কাজের ক্ষতি করে তাতে নিবিষ্ট থাকি না।
- সংবাদ পরিবেশনে সম্ভাব্য স্বার্থের সংঘাত এড়ানোর জন্য নিজেদের বা পরিবারের কোনো সদস্যের ব্যবসা-বাণিজ্য বা চাকরির তথ্য আমরা আগেই কর্তৃপক্ষের গোচরে আনি।
সম্পর্ক ও সংগঠন- সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমাদের কোনো রকম লেনদেন নেই।
- আমাদের ব্যক্তিগত রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকলেও আমরা কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রতিষ্ঠানের সদস্য নই।
- যে ধরনের সাংগঠনিক ক্রিয়াকলাপ আমাদের পেশাগত কাজকে বিঘ্নিত কিংবা পাঠকদের চোখে আমাদের পেশাদারি পক্ষপাতহীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে, সেসবের সঙ্গে আমরা নিজেদের জড়াই না।
- আমাদের মধ্যে কেউ দেশের প্রভাবশালী কোনো পরিবারের সদস্য হলে বা তাদের সঙ্গে আত্মীয়সূত্রে আবদ্ধ থাকলে কিংবা তাদের সঙ্গে কোনো ব্যবসায়িক লেনদেনে যুক্ত থাকলে, সে তথ্য সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে আমরা আগেই অবগত করি।
নারী নীতিমালা
অধিকারের সমতা- আমরা নারীর, তথা সব লিঙ্গের সমান অধিকার ও সমতায় দৃঢ়বিশ্বাসী। আমাদের সাংবাদিকতা ও অন্যান্য কর্মকাণ্ডে আমরা এ অবস্থানের প্রতিফলন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুত।
- লেখা, ছবি বা কার্টুনে নারীর প্রতি লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য, ছাঁচে-ঢালা ধারণা, সংস্কার, নেতিবাচক ইঙ্গিত বা বার্তা প্রকাশ না করার ব্যাপারে আমরা সচেতন। তেমন বয়ান কোনো সংবাদ বা কারও মতামতের অপরিহার্য অংশ হলে আমরা তা যথাযথ প্রেক্ষাপট এবং যথোপযুক্ত বিশেষজ্ঞদের মতামতসহ প্রকাশ করি। প্রয়োজনে তা প্রকাশ করার পেছনে আমাদের যুক্তি সম্পাদকীয় বক্তব্য ছেপে অবহিত করি।
- ‘মহিলা’ শব্দটির বদলে আমরা যথাসম্ভব ‘নারী’ ব্যবহার করি।
- কোনো লেখায় বা বিষয়ে অহেতুক নারীর প্রসঙ্গ টেনে নারীবিদ্বেষী বয়ান, বক্তব্য, ধারণা বা ছবি পরিবেশন করি না।
- কোনো নারীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ওঠার পর তার সত্যতা নিশ্চিত না হলে এবং তা অহেতুক বা বিদ্বেষপ্রসূত মনে হলে আমরা ঘটনাটির সংবাদমূল্য বিবেচনা করি। সে বিবেচনায় খবরটি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিলে আমরা প্রাসঙ্গিক অন্য সব তথ্য খবরে সংযুক্ত করি। তবে নারীটির নাম-পরিচয় গোপন রাখি, যাতে তাঁর অহেতুক সম্মানহানি বা অকারণ ক্ষতি না হয়।
নাম ও পরিচয়- সাধারণভাবে পাচারকৃত নারী বা শিশু উদ্ধার করা হলে তাদের নাম, পরিচয় ও ছবি আমরা ছাপি না। খবরের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিপন্ন করার জন্য ছবি ছাপাতে হলে মুখ অস্পষ্ট করি দিই। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে নারী বা শিশুটির সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার শঙ্কা না থাকলে এবং এতে তার উপকারের সম্ভাবনা থাকলে সম্পাদকীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে তার ছবি ছাপাই।
- যৌনপল্লি উচ্ছেদের ছবি খবরের সত্যতা যাচাইয়ের পক্ষে কাজ করতে পারে বলে মনে হলে ছবি ছাপানোর সময় সেখানকার বাসিন্দা মেয়ে বা শিশুদের চেহারা অস্পষ্ট করে দিই। যৌনপল্লির বাইরে যৌন ব্যবসাসংক্রান্ত কোনো নিপীড়ন, নির্যাতন বা অপরাধের চিত্র তুলে ধরার স্বার্থে ছবি ছাপার ক্ষেত্রেও একই নীতি মেনে চলি। এ পেশায় যুক্ত নারী ও শিশুর নাম, পরিচয় ও ছবি আমরা প্রকাশ করি না। যৌনসেবার গ্রাহক বা পুরুষ ব্যবসা নিয়ন্ত্রকের ছবি সংবাদের প্রয়োজন বুঝে ছাপাই।
- ধর্ষণ, অ্যাসিড হামলা, যৌতুক বা অন্যান্য নারী নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তির ছবি ছাপাতে হলে তাকে ‘অপরাধী’ না লিখে ‘অভিযুক্ত’ লিখি। এ-সংক্রান্ত মামলা চলাকালে তথ্য পরিবেশনের ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক আইন মেনে চলি।
- সাধারণভাবে কোনো নারী অপরাধী হিসেবে প্রমাণিত হলে স্বাভাবিক নিয়মেই নাম-পরিচয়সহ তাঁর খবর প্রকাশ করি। তবে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ওপর জোর দিই; ঢালাও দোষারোপ, কলঙ্কারোপ বা এ-জাতীয় ইঙ্গিত দিই না। তবে ক্ষেত্রবিশেষে অভিযুক্তের শিশুসন্তানের অহেতুক ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে তাঁর নাম, পরিচয় ও ছবি গোপন রাখি।
- যৌন, যৌতুকসংক্রান্তসহ স্পর্শকাতর বিষয়ে অপরাধের শিকার এবং অপরাধের সাক্ষী নারী বা শিশুর নাম, পরিচয় ও ছবি প্রকাশের আইনি নিষেধাজ্ঞা আমরা মেনে চলি। বিশেষ ক্ষেত্রে নাম-পরিচয় প্রকাশ করতে হলে আদালতের অনুমতি নিই।
পীড়ন ও লাঞ্ছনা- কোনো নারী শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার শিকার হলে এবং এ-সংক্রান্ত খবর ও ছবি ছাপার কারণে তাঁর সামাজিক সম্মান বা সম্ভ্রম আহত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে খবর পরিবেশনের সময় তাঁর নাম, পরিচয় ও ছবি ছাপাই না। হরতালে বা রাজনৈতিক মিছিলে কোনো নারীর বস্ত্র খুলে ফেলার ছবি ছাপতে হলে তাঁর চেহারা ও ছবির স্পর্শকাতর অংশ ঢেকে বা অস্পষ্ট করে দিই। তবে লাঞ্ছনার শিকার কোনো প্রাপ্তবয়স্ক নারী নিজেই প্রকাশ্যে ঘটনাটি বয়ান করলে তাঁর নাম, পরিচয় ও ছবি ছাপাই।
- অ্যাসিডদগ্ধ নারীর ছবি পীড়াদায়ক হলে এ-জাতীয় ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করি। ক্ষেত্রবিশেষে বর্বরতার মাত্রা বোঝানোর জন্য তাঁর অ্যাসিডদগ্ধ ছবির পাশাপাশি মূল চেহারার ছবিও প্রকাশ করি। তবে অ্যাসিডদগ্ধ নারীর নাম, পরিচয় ও ছবি প্রকাশ করার আগে তাঁর ও তাঁর অভিভাবকদের অনুমতি নিই। আঞ্চলিক প্রতিনিধিরা এ-জাতীয় প্রতিবেদনে নারীর নাম, পরিচয় ও ছবি পাঠালে তা প্রকাশের প্রামাণ্য অনুমতি সংগ্রহ করি। প্রামাণ্য অনুমতি নিজ দায়িত্বে অফিসকে পাঠাতে আঞ্চলিক প্রতিনিধিদের আমরা উৎসাহিত করি।
- গোলটেবিল বৈঠক, সেমিনার বা বিশেষ পরিবেশে কোনো ভুক্তভোগী নিজের নাম-পরিচয় প্রকাশ করে কথা বললেও তাঁর নাম, পরিচয় ও ছবি প্রকাশের জন্য তাঁর লিখিত ও সজ্ঞান সম্মতি নিই। ভুক্তভোগী অপ্রাপ্তবয়স্ক হলে তাঁর নাম, পরিচয় ও ছবি প্রকাশ করি না।
- এইচআইভি/এইডসে বা অনুরূপ ভুক্তভোগী নারীর হেয় হওয়ার বা ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে তাঁদের নাম, পরিচয় ও ছবি প্রকাশ করি না।
- মায়ের বিরুদ্ধে সন্তান হত্যার অভিযোগ উঠলে অথবা তেমন অপরাধ প্রমাণিত হলে সে খবর এবং খবরের শিরোনাম আমরা সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এবং সতর্কতার সঙ্গে লিখি। ‘হত্যাকারী মা’-জাতীয় ঢালাও ধারণার প্রকাশ ঘটাই না।
ধর্ষণের খবর- ‘ধর্ষিতা’ শব্দটির বদলে আমরা যথাসম্ভব ‘ধর্ষণের শিকার’ কথাটি ব্যবহার করি।
- ধর্ষণের প্রতিবেদন যথাসম্ভব সাবধানতা ও সচেতনতার সঙ্গে লিখি। লেখায় রগরগে, উত্তেজক বা ইঙ্গিতপূর্ণ কোনো কিছু উল্লেখ করি না।
- ধর্ষণ, ধর্ষণচেষ্টা বা যৌন হয়রানির শিকার কোনো নারীর নাম ও ছবি আমরা ছাপাই না। তাঁকে শনাক্ত করতে পারার মতো কোনো তথ্যও দিই না।
- প্রতিবেদনের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণের জন্য ধর্ষণের শিকার কোনো নারীর ছবি ছাপাতে হলে তাঁর চেহারা অস্পষ্ট করে দিই।
- ধর্ষণ বা অনুরূপ কোনো অপরাধের শিকার হয়ে কোনো নারী নিহত হলে আইনি নিষেধাজ্ঞা মেনে তাঁর নাম, পরিচয় ও ছবি আমরা প্রকাশ করি না। ইতিবাচক কোনো উদ্দেশ্যে তা করতে হলে যথাযথ সম্পাদকীয় সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তা করি। এর জন্য অপরাধের শিকার নারীর নিকটতম স্বজনের এবং প্রয়োজনে আদালতের অনুমতি নিই।
শিশু-কিশোর নীতিমালা
স্বার্থ ও বিকাশ- সাংবাদিকতাসহ অন্যান্য কর্মকাণ্ডে শিশু-কিশোরদের সার্বিক মঙ্গল ও বিকাশের কথা আমরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করি।
- আমাদের বিবেচ্য প্রসঙ্গের মধ্যে শিশু-কিশোরদের স্বার্থ রক্ষা করার মতো বিষয়গুলো আমরা অন্তর্ভুক্ত রাখতে সচেষ্ট থাকি। আমরা সচেতন থাকি, যাতে আমাদের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও, কার্টুন, প্রচারণা বা কর্মকাণ্ডে শিশু-কিশোরদের স্বার্থহানি না ঘটে।
অধিকার ও সম্পৃক্ততা- বাংলাদেশের বিবিধ আইনের আলোকে ১৮ বছরের কম বয়সীদের আমরা শিশু-কিশোর হিসেবে গণ্য করি। স্পর্শকাতর এই বিকাশপর্বে শিশু-কিশোরদের বিশেষ সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারের প্রতি আমরা সচেতন। জীবন-জগৎকে জানতে-বুঝতে তাদের সহযোগিতা করার জন্য আমরা নানা প্রকাশনা ও কর্মকাণ্ডের আয়োজন করি।
- প্রাসঙ্গিক আলোচনা ও বিতর্কের ক্ষেত্রে শিশু-কিশোরদের আমরা বয়সোচিত অংশগ্রহণের সুযোগ দিই।
- শিশু-কিশোরদের জন্য প্রকাশিত আমাদের বিভিন্ন ক্রোড়পত্র, ম্যাগাজিন, অনলাইনসহ পত্রিকার যেকোনো আয়োজনে সরাসরি অংশ নিতে আমরা তাদের উদ্বুদ্ধ করি।
- আমাদের আয়োজন করা বিভিন্ন উন্মুক্ত অনুষ্ঠান ও উৎসবে ভোক্তা হিসেবে শিশু-কিশোরদের সানন্দ উপস্থিতি আমরা প্রত্যাশা করি।
- শিশু-কিশোরদের জন্য আয়োজিত প্রতিযোগিতা বা কর্মকাণ্ডে তাদের সম্পৃক্ত করতে হলে আমরা তাদের পারিবারিক বা প্রাতিষ্ঠানিক অভিভাবকের সম্মতি নিই। আয়োজনে সরাসরি যুক্ত শিশু-কিশোরদের মর্যাদা ও সুরক্ষা দিই। কাজের সুবাদে কেউ যাতে আহত, ক্ষতিগ্রস্ত, উৎকণ্ঠিত বা সংকটাপন্ন না হয়, সে ব্যাপারে যত্ন নিই।
- আমাদের বিজ্ঞাপনে শিশু-কিশোরদের যেকোনো রকম ব্যবহারে আমরা অভিভাবকদের লিখিত অনুমোদন নিয়ে থাকি।
সম্পাদকীয় অবস্থান- শিশু-কিশোরদের কল্যাণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আমরা জনসমক্ষে নিয়ে আসার জন্য সচেষ্ট থাকি।
- একক বা গোষ্ঠীগতভাবে শিশু-কিশোরদের বিপন্নতা, অধিকারের লঙ্ঘন বা তাদের প্রতি অন্যায়ের ঘটনাকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। প্রতিবেদন, সম্পাদকীয় ও উপসম্পাদকীয়কে সে বিষয়ে সচেতনতা, জনবিতর্ক ও জনমত তৈরিতে সক্রিয় থাকি।
- শিশু-কিশোরদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ে তাদের মতামতের প্রাসঙ্গিকতা থাকলে আমরা তা গ্রহণ করি।
- বয়স, লিঙ্গ, আর্থসামাজিক অবস্থা, ধর্মবিশ্বাস, নৃতাত্ত্বিক পরিচয় বা প্রতিবন্ধিতা ইত্যাদি কোনো কিছুর ভিত্তিতেই আমরা শিশু-কিশোরের প্রতি বৈষম্য করি না। আমাদের লেখা, ছবি, ভিডিও বা কার্টুন প্রকাশের সময় এ ব্যাপারে সচেতন থাকি। বরং বিপন্ন কোনো শিশু বা কিশোর কিংবা শিশু-কিশোর সম্প্রদায়ের প্রতি আমরা বিশেষ মনোযোগ দিই।
- শিশু-কিশোরদের উপস্থাপনের সময় আমরা আতিশয্য, চটক ও অনুকম্পা পরিহার করি।
- লেখা, ছবি বা ভিডিওতে আমরা মাদক সেবন, নেশার অনুভূতি, আত্মহত্যার উপায়, বিস্ফোরক বানানোর পদ্ধতি–জাতীয় অপরাধমূলক ঘটনার বিশদ বিবরণ দিই না। বরং শিশু-কিশোরদের এ-জাতীয় প্রবণতার প্রতিরোধমূলক তথ্য দিতে আমরা সচেষ্ট থাকি।
- শিশু-কিশোরদের অসংগতভাবে উপস্থাপন করা বিজ্ঞাপন যাতে প্রকাশিত না হয়, সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক থাকি। আমরা নজর রাখি, যাতে কোনো বিজ্ঞাপন প্রকাশের কারণে শিশু-কিশোরেরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
নীতি ও প্রয়োগ- কোনো ঘটনায় কোনো শিশু-কিশোর জড়িত থাকলে লক্ষ রাখি, যাতে তথ্য পরিবেশনের সময় তার নিরাপত্তা, স্বার্থ ও সুরক্ষা ক্ষুণ্ন না হয়। শিশু-কিশোর আইনের সংস্পর্শে বা আইনের সঙ্গে সংঘাতে এলে তার পরিচয় প্রকাশ করি না কিংবা এমন কোনো তথ্য দিই না, যাতে তাকে শনাক্ত করা যায়। আদালতে সাক্ষ্যদাতা শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রেও এ নিয়ম মেনে চলি। শিশু-কিশোরের প্রতি কোনো অন্যায়, অবিচার বা অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা প্রমাণের জন্য ছবি ছাপানোর প্রয়োজন হলে তার মুখ অস্পষ্ট করে দিই।
- শোকাতুর, যৌনলাঞ্ছনা বা নির্যাতনের শিকার, এইচআইভি/এইডস সংক্রমিত, মাদকাসক্ত, আইনের সঙ্গে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে থাকা শিশু-কিশোরদের সঙ্গে কথা বলার সময় সর্বোচ্চ সতর্কতা ও সংবেদনশীলতার পরিচয় দিই। কথা বলার সময় পরিস্থিতি বিবেচনা করে তার অভিভাবক, হিতৈষী বা বিশেষজ্ঞকে সঙ্গে রাখি। তাদের পরিচয় ও শনাক্ত করার মতো তথ্য পরিবেশন করি না। এ পরিস্থিতিতে নিপতিত শিশু-কিশোরের ছবি না ছাপানোকে অগ্রাধিকার দিই।
- কোনো লেখা, বিশেষ করে ছবি বা ভিডিও প্রকাশের সময় শিশু-কিশোরদের ওপর তার সম্ভাব্য প্রভাবের বিষয়টি আমরা মাথায় রাখি। লেখায় আমরা সহিংসতা বা বীভৎসতার বিশদ বিবরণ এড়িয়ে চলি। বীভৎস, নৃশংস বা রক্তাক্ত ছবি পরিহার করি। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশের জন্য এ ধরনের ছবি বা ভিডিও প্রকাশ জরুরি হলে সংশ্লিষ্ট অংশ অস্পষ্ট করে দিই এবং তার কারণ লিখে জানাই।
- তথ্যের প্রয়োজনে শিশু-কিশোরদের সঙ্গে কথা বলার সময় আমরা অভিভাবক বা প্রয়োজনীয় কর্তৃপক্ষের সম্মতি নিই। সম্মতি পেলেও বক্তব্য পরিবেশন করার কারণে যাতে তার কোনো ক্ষতি না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকি। কথা বলার সময় তাদের ওপর কিছু চাপিয়ে দিই না। এমনভাবে কথা বলি না, যাতে তারা ঘাবড়ে যায় বা মন জোগানো তথ্য দেয়। তাদের দেওয়া তথ্য পরিবেশনের আগে ভালোমতো যাচাই করে নিই।
- শিশু-কিশোরদের ছবি তোলার সময়ও অভিভাবক বা প্রয়োজনীয় কর্তৃপক্ষের সম্মতি নিই। ক্ষেত্রবিশেষে প্রকাশ্য জনাকীর্ণ এলাকায় এর ব্যত্যয় হলেও কোনো শিশু বা কিশোর কিংবা তাদের অভিভাবক আপত্তি করলে সেটি মান্য করি।
- বিনা প্রয়োজনে শিশু-কিশোরদের ব্যক্তিগত তথ্য নিই না। সংগত কারণে তা নেওয়া হলে কাজ শেষে সেসব নষ্ট করে ফেলি। সেসব তথ্য তৃতীয় কাউকে দিই না।
- সমাজবিরোধী কাজে অভিযুক্ত কারও তথ্য পরিবেশনের সময় তার পরিবারের শিশু-কিশোর সদস্যদের অপ্রাসঙ্গিকভাবে টেনে আনি না। অপরিহার্য কারণে কোনো তথ্য উল্লেখ করতে হলে তাদের নিরাপত্তা ও ঝুঁকির দিকটি সতর্ক বিবেচনায় রাখি।
- অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তথ্য পরিবেশনের সময় লক্ষ রাখি, যেন সেখানে শিশু-কিশোরদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলার মতো কোনো লিংক না থাকে। সেখান থেকে শিশু-কিশোরদের ব্যক্তিগত তথ্য যাতে অন্য কারও হাতে না পড়ে, সে ব্যাপারেও আমরা সতর্ক থাকি।